Bangladeshi Bird(Cuckoo)
কোকিল
কোকিল (Cuckoo) Cuculiformes বর্গের বৈশিষ্ট্যময় এক দল পাখি। পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র ১৩০ প্রজাতির কোকিল আছে। বাংলাদেশের ২০ প্রজাতির কোকিলের মধ্যে ১৪টি স্থায়ী বাসিন্দা এবং ৬টি পরিযায়ী ।
এশীয় কোকিল (পুরুষ)
কোকিলের ঠোঁট সামান্য বাঁকানো, পুচ্ছ দীর্ঘ, ডানা চওড়া ও সুচালো, গড়ন লম্বাটে। এদের প্রতি পায়ে দুটি করে আঙুল অগ্রমুখী ও পশ্চাদমুখী। পূর্ব গোলার্ধের কোকিলেরা বৃক্ষবাসী এবং এদের অন্যূন ৫০ প্রজাতি অন্য প্রজাতির পাখির বাসায় ডিম পাড়ে, কখনও এসব ডিম অবিকল পোষক পাখির ডিমের মতো। কোকিল সরাসরি অন্য যেসব পাখির বাসায় ডিম পাড়ে (brood parasitism), সেসব বাসা ছোট ও আবদ্ধ হতে পারে। পোষক পাখি বাসা ছেড়ে দূরে গেলে কোকিল পোষকের একটি ডিম ফেলে দিয়ে সেখানে নিজের একটি ডিম পেড়ে রাখে। প্রায় ১২ দিনে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়, বাচ্চার শরীর তখন পুরো খালি থাকে। বাচ্চাটি শীঘ্রই পালক পিতামাতার ডিম বা নবজাত বাচ্চাদের পিঠে তুলে বাসার কিনারায় ঠেলে দেয় এবং পালক পিতামাতার আনা সকল খাবার ও যত্ন ভোগ করে। কোকিল সম্ভবত নিঃসঙ্গচারী, পুরুষরা প্রায়শ অতিশয় আকর্ষণীয় এবং ডাকে উচ্চস্বরে, সুরেলা কণ্ঠে, এমনকি রাতেও; অথচ স্ত্রীরা থাকে আড়ালে, ডাকে ভিন্নভাবে, এমনকি ডাকেও না। এজন্য বাংলাদেশের বহুদৃষ্ট কোকিলকে (Common Hawk Cuckoo) অনেক সময় প্রলাপী পাখি (brainfever bird) বলা হয়। অনেক প্রজাতির কোকিল পরিযায়ী। শুঁয়োপোকা এদের প্রধান খাদ্য।
বাংলাদেশে Pied Cuckoo (পাপিয়া), Indian Cuckoo (বউ কথা কও), Asian Cuckoo (কোকিল) ও Common Hawk Cuckoo (চোখগেলো) নানা রূপকথা ও বিশ্বাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। ‘বউ কথা কও’ বিরহী স্বামীর প্রিয়তম স্ত্রীর প্রতি কাতর আহবানকে স্মরণ করিয়ে দেয়। মানুষের বিশ্বাস পাখিটি বিষণ্ণ স্বামীর প্রতিমূর্তি। অনেকের কাছে ‘কোকিল’ বসন্তের প্রতীক।
কালো কোকিল ভারতীয় উপমহাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার কালো রঙের লম্বা লেজবিশিষ্ট বৈশিষ্ট্যময় দুই প্রজাতির কোকিল। কালো কোকিল বা এশীয় কোকিল Eudynamys scolopacea বাংলাদেশেরও বাসিন্দা। কুহু কুহু সুরেলা ডাকের জন্য বিখ্যাত। ভোরে অন্যান্য পাখির আগেই কোকিল ডাকে। স্ত্রী পাখির ডাক ভিন্নতর, তীব্র কিক্-কিক্-কিক্-কিক্ স্বরে এক গাছ থেকে অন্য গাছে যেতে যেতে ডাকে।
লম্বাটে গড়নের এ পাখি আকারে ছোটখাটো পাতিকাকের মতো। পুরুষ পাখি উজ্জ্বল কালো, ঠোঁট হালকা হলুদ, চোখ গাঢ় লাল। স্ত্রী পাখি গাঢ় বাদামি এবং শরীরে সাদা ফোঁটা ও দাগ রয়েছে। পাতাভরা গাছেই এরা খাবার খোঁজে। সাধারণত শীতকালে নীরব থাকে, অতঃপর ক্রমে সরব হয়ে বসন্তে অবিরাম ডাকে। এজন্যই অনেকে কোকিলকে বসন্তের পাখি বলে। এরা বাসা বাঁধে না, কাকসহ কয়েক প্রজাতির পাখির বাসায় ডিম পাড়ে। কালো কোকিল, দাঁড়কাক ও পাতিকাকের ডিম পাড়ার সময় এপ্রিল-আগস্ট এবং ডিম দৃশ্যত অভিন্ন। একই বাসায় পালকপাখি ও কোকিলের ডিম বা ছানা দেখা যায়। মা-কোকিলও কখনও কখনও বাচ্চাদের খাদ্য খাওয়ায়। কোকিল মুখ্যত ফলভুক, তবে নানা ধরনের
সূত্র:বাংলাপিডিয়া
No comments